মাননীয় আব্বা , আপনারে সালাম জানিয়ে আমার এই বাজেট অধিবেশন শুরু করছি। আইজকা আমি আগামী অর্থবছরের জন্য আমার একান্ত বাজেট পেশ করতাছি ... আমি আশা করছি আপনে খুশি হইয়াই অনুমোদন দিবেন !!!
পরথমেই শিক্ষাখাত,
আব্বা শিক্ষা হইলো জাতির মেরুদন্ড । Education Is the ……..মেরুদন্ডের ইংলিশ টা ভুইল্লা গেসি... সে যাক, বিগত দুইডা বছর ধইরা আমি সাফল্যের সহিত অত্যান্ত্য চমৎকার ফলাফল করে আসিতেছি ... এখন পর্যন্ত আমি মাত্র ১৮ টা কোর্স Retake করছি। যা কিনা আমার বন্ধু মহলের মধ্যে সরবনিম্ন !! সে অনুপাতে আগামী বছর আমার কমপক্ষে আরো ৯ টা Retake লাগবে । এই জইন্যে আপনে কমপক্ষে ২০০০০ ট্যাকা বরাদ্দ রাখবেন। এরপরে খাদ্যখাত,
আব্বাগো, দুঃখের কথা কি কইবাম? দুইডা বচ্ছর ধইরা ভার্সিটিতে প্রত্যেকদিন মাত্র ১ টা বার্গার আর ১ টা হটডগ খাইয়া কুনোমন্তে বাইচ্চা আছি ! এতো কম খাইয়া পড়ালেখায় মন কেমনে দিমু গো আব্বা ? তাই কইতাসি আগামি বছরের জন্য প্রত্যেকদিন ভার্সিটিতে আমি যাতে ২ টা বার্গার, ১ টা পিজ্জা , ১ টা চিকেন সমুচা , ১ টা হটডগ খাইবার পারি সেই ব্যাবস্থা রাইখেন। এ ছাড়াও ৬ টা ট্যাঁকা বাড়তি দিয়েন গো আব্বা। কি জইন্য এইডা আর কইলাম না ! আর বিকালে এক কাপ কফি আর হালকা (!) নাস্তা না খাইলে আমার পক্ষে পড়ালেখায় মনোনিবেশ করা কষ্টকর হইবে !!
এখন আসি স্বাস্থ্যখাতে ,
আব্বা , গত ৬ টা মাস ধইরা আমার হার্টের বাম পাশে চিকন চিকন ব্যাদনা । মলিরে যখন দেখি তখন সেই ব্যাদনা আর বাইড়া যায়। শুধু তাইনা মলির কথা চিন্তা করলেও এই ঘটনা ঘটে। আব্বা গো আমার দিলের মধ্যে কিযে সুনামি এইডা আপনে বুঝবেন না। কবির ভাষায় “ ওরে হারাই হারাই সদা হয় ভয়, হারাইয়া ফেলি চকিতে !!! “ এই ভয় থাইক্কা মুক্তি না পাইলে আমার অন্তরের বিষ কমবো না। তাই মলির উপযুক্ত গিফটের মাধম্যে পটাইয়া যাতে আমি এই দুরারোগ্য ব্যাধি হইতে মুক্তি পাই... সেই ব্যাবস্থা করার দায়িত্ব আপনার হাতে !!
ক্রীড়া ও বিনোদন খাত
আব্বা আমি অত্যান্ত দুঃখের সাথে জানাইতেসি যে, উল্লেখযোগ্য অর্থ বরাদ্দের অভাবে ক্রীড়া ক্ষেত্রে আমি দিন দিন পিছিয়ে পড়তেছি। কয়েক বছর আগে যে রাজীব ‘স্নুকার’ খেলায় আমার ধারে কাছেই আইতে পারতো না সেই পুলার কাছে গত সপ্তাহে আমি ৫০০ ট্যাঁকা বাজী হারছি !!! এইভাবে চলতে থাকলে আমার ও আমার পরিবারের মান ইজ্জত ধুলায় মিইশা যাইবো। আপনে গেরামে মুখ দেখাইতে পারবেন না। রাজিবের এই সাফল্যের রহস্য হইলো সে সপ্তাহের ৭ দিনই ক্লাবে গিয়া খেলে আর আমি ট্যাকার অভাবে সপ্তাহে মাত্র ৩-৪ দিন খেলতে পারি। আপনে ক্রীড়াক্ষেত্রে বিশেষ বরাদ্দের ব্যাবস্থা রাখলে আমি প্রত্যেকদিন খেইলা ও প্রশিক্ষন লইয়া ওই বড়লোকের কুলাঙ্গার সন্তানরে হারাইয়া আপনার ও আমার গেরামের ইজ্জত রক্ষা করতে পারুম !!!
এখন আসি বিনোদনে। বিনোদনের কথা আর কি কমু ? ... বিনোদনের অভাবে আমার এই জীবন মরুভুমিতে পরিনিত হইয়া যাইতেসে গো আব্বা । সিনে কমপ্লেক্সে গিয়া সপ্তাহে ১ টার বেশী সিনেমা আমি দেখতে পারিনা। মাসে ডিভিডি কিইন্না বড়জোর ৩০-৪০ টা সিনেমা দেখতে পারি। কোন কোন মাসে আরো কম! বুঝি আর না বুঝি ইদানিং ইংলিশ ব্যাটাগো মুভি না দেখলে বন্ধুদের কাছে ইজ্জত থাকেনা। আমি এই সমস্যের আশু সমাধান কামনা করতেছি...।
মাঝে মাঝে আপনার কথা খুব মনে পড়ে। সেই যে ছোটবেলায় আপনে আমারে পুশকুনিতে নামাইয়া গোসল করাইতেন। আহ । এইগুলান মনে পড়লে আমার চউক্ষের পানিতেই পুশকুনি হইয়া যায় ! আমার তখন ইচ্ছা করে পুশকুনিতে নাইম্যা গোছল করি !! কিন্তু এই ঠাডা পড়া শহরে পুশকুনি তো দূরের কথা বাথরুমের বালতিতেও পানি থাকেনা । তাই মাঝে মাঝে সুইমিং পুলে গিয়া দুইডা ডুব সাতার না দিলে পরানে শান্তি পাইনা গো আব্বা!! এই বিষয়ে একটু খেয়াল রাইখবেন !!!
এরপরে আসি তইথ্য ও পরজুক্তি খাতে ...
আব্বা দেশ এখন অনেক আগাইছে ... এখন হইছে আপনার ইন্টারনেট যুগ !! জিপি মোডেম দিয়া ইন্টারনেট ব্রাউজ করমু কি ? একবার বইলে, বইতে বইতে কোমরের নিচ অবশ হইয়া যায়। পেজ লোড হইতে হইতে চউক্ষে ঘুম লোড হইয়া যায়। আগে আঞ্জেলিনা জোলিরে ডাউনলোড দিলে বুড়া হইয়া আইতো ... আর এখন আসে তার লাশ !!! তাই আগামি অর্থবছরের আমার লাইগা একখান ১ এম বি পি এস স্পীডের ওয়াইম্যাক্স মোডেম ও কার্ডের জইন্য মাসে নুন্যতম ১২০০ ট্যাকা বরাদ্দ রাইখেন! না হইলে ফেসবুক পেজ “আমরা বড়লোক বাপের গরীব সন্তান’ চালানো কষ্টকর হইয়া পড়বো। এ ছাড়া ডেক্সটপ কম্পিউটারের কারনে ঘরের বাইরে গেলে আমি বহিঃবিশ্বের সাথে একপ্রকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ি। এর ফলে আমার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক আজ হুমকির মুখে। একখান ল্যাপটপ থাকলে আইজ আমার এই দশা হইতো না। বিষয়টা ভাইবা দেখার অনুরোধ রইলো।
পরিশেষে , বিগত দিনগুলাতে আমি যে দুর্ভোগ , দুর্দশায় ছিলাম আশা করছি আসছে বছরে এই বাজেট অনুমোদনের মাধ্যমে আমার সেই দুঃখের দিন গুলার অবসান ঘটবে ।
আপনারে ধইন্যবাদ।
পরথমেই শিক্ষাখাত,
আব্বা শিক্ষা হইলো জাতির মেরুদন্ড । Education Is the ……..মেরুদন্ডের ইংলিশ টা ভুইল্লা গেসি... সে যাক, বিগত দুইডা বছর ধইরা আমি সাফল্যের সহিত অত্যান্ত্য চমৎকার ফলাফল করে আসিতেছি ... এখন পর্যন্ত আমি মাত্র ১৮ টা কোর্স Retake করছি। যা কিনা আমার বন্ধু মহলের মধ্যে সরবনিম্ন !! সে অনুপাতে আগামী বছর আমার কমপক্ষে আরো ৯ টা Retake লাগবে । এই জইন্যে আপনে কমপক্ষে ২০০০০ ট্যাকা বরাদ্দ রাখবেন। এরপরে খাদ্যখাত,
আব্বাগো, দুঃখের কথা কি কইবাম? দুইডা বচ্ছর ধইরা ভার্সিটিতে প্রত্যেকদিন মাত্র ১ টা বার্গার আর ১ টা হটডগ খাইয়া কুনোমন্তে বাইচ্চা আছি ! এতো কম খাইয়া পড়ালেখায় মন কেমনে দিমু গো আব্বা ? তাই কইতাসি আগামি বছরের জন্য প্রত্যেকদিন ভার্সিটিতে আমি যাতে ২ টা বার্গার, ১ টা পিজ্জা , ১ টা চিকেন সমুচা , ১ টা হটডগ খাইবার পারি সেই ব্যাবস্থা রাইখেন। এ ছাড়াও ৬ টা ট্যাঁকা বাড়তি দিয়েন গো আব্বা। কি জইন্য এইডা আর কইলাম না ! আর বিকালে এক কাপ কফি আর হালকা (!) নাস্তা না খাইলে আমার পক্ষে পড়ালেখায় মনোনিবেশ করা কষ্টকর হইবে !!
এখন আসি স্বাস্থ্যখাতে ,
আব্বা , গত ৬ টা মাস ধইরা আমার হার্টের বাম পাশে চিকন চিকন ব্যাদনা । মলিরে যখন দেখি তখন সেই ব্যাদনা আর বাইড়া যায়। শুধু তাইনা মলির কথা চিন্তা করলেও এই ঘটনা ঘটে। আব্বা গো আমার দিলের মধ্যে কিযে সুনামি এইডা আপনে বুঝবেন না। কবির ভাষায় “ ওরে হারাই হারাই সদা হয় ভয়, হারাইয়া ফেলি চকিতে !!! “ এই ভয় থাইক্কা মুক্তি না পাইলে আমার অন্তরের বিষ কমবো না। তাই মলির উপযুক্ত গিফটের মাধম্যে পটাইয়া যাতে আমি এই দুরারোগ্য ব্যাধি হইতে মুক্তি পাই... সেই ব্যাবস্থা করার দায়িত্ব আপনার হাতে !!
ক্রীড়া ও বিনোদন খাত
আব্বা আমি অত্যান্ত দুঃখের সাথে জানাইতেসি যে, উল্লেখযোগ্য অর্থ বরাদ্দের অভাবে ক্রীড়া ক্ষেত্রে আমি দিন দিন পিছিয়ে পড়তেছি। কয়েক বছর আগে যে রাজীব ‘স্নুকার’ খেলায় আমার ধারে কাছেই আইতে পারতো না সেই পুলার কাছে গত সপ্তাহে আমি ৫০০ ট্যাঁকা বাজী হারছি !!! এইভাবে চলতে থাকলে আমার ও আমার পরিবারের মান ইজ্জত ধুলায় মিইশা যাইবো। আপনে গেরামে মুখ দেখাইতে পারবেন না। রাজিবের এই সাফল্যের রহস্য হইলো সে সপ্তাহের ৭ দিনই ক্লাবে গিয়া খেলে আর আমি ট্যাকার অভাবে সপ্তাহে মাত্র ৩-৪ দিন খেলতে পারি। আপনে ক্রীড়াক্ষেত্রে বিশেষ বরাদ্দের ব্যাবস্থা রাখলে আমি প্রত্যেকদিন খেইলা ও প্রশিক্ষন লইয়া ওই বড়লোকের কুলাঙ্গার সন্তানরে হারাইয়া আপনার ও আমার গেরামের ইজ্জত রক্ষা করতে পারুম !!!
এখন আসি বিনোদনে। বিনোদনের কথা আর কি কমু ? ... বিনোদনের অভাবে আমার এই জীবন মরুভুমিতে পরিনিত হইয়া যাইতেসে গো আব্বা । সিনে কমপ্লেক্সে গিয়া সপ্তাহে ১ টার বেশী সিনেমা আমি দেখতে পারিনা। মাসে ডিভিডি কিইন্না বড়জোর ৩০-৪০ টা সিনেমা দেখতে পারি। কোন কোন মাসে আরো কম! বুঝি আর না বুঝি ইদানিং ইংলিশ ব্যাটাগো মুভি না দেখলে বন্ধুদের কাছে ইজ্জত থাকেনা। আমি এই সমস্যের আশু সমাধান কামনা করতেছি...।
মাঝে মাঝে আপনার কথা খুব মনে পড়ে। সেই যে ছোটবেলায় আপনে আমারে পুশকুনিতে নামাইয়া গোসল করাইতেন। আহ । এইগুলান মনে পড়লে আমার চউক্ষের পানিতেই পুশকুনি হইয়া যায় ! আমার তখন ইচ্ছা করে পুশকুনিতে নাইম্যা গোছল করি !! কিন্তু এই ঠাডা পড়া শহরে পুশকুনি তো দূরের কথা বাথরুমের বালতিতেও পানি থাকেনা । তাই মাঝে মাঝে সুইমিং পুলে গিয়া দুইডা ডুব সাতার না দিলে পরানে শান্তি পাইনা গো আব্বা!! এই বিষয়ে একটু খেয়াল রাইখবেন !!!
এরপরে আসি তইথ্য ও পরজুক্তি খাতে ...
আব্বা দেশ এখন অনেক আগাইছে ... এখন হইছে আপনার ইন্টারনেট যুগ !! জিপি মোডেম দিয়া ইন্টারনেট ব্রাউজ করমু কি ? একবার বইলে, বইতে বইতে কোমরের নিচ অবশ হইয়া যায়। পেজ লোড হইতে হইতে চউক্ষে ঘুম লোড হইয়া যায়। আগে আঞ্জেলিনা জোলিরে ডাউনলোড দিলে বুড়া হইয়া আইতো ... আর এখন আসে তার লাশ !!! তাই আগামি অর্থবছরের আমার লাইগা একখান ১ এম বি পি এস স্পীডের ওয়াইম্যাক্স মোডেম ও কার্ডের জইন্য মাসে নুন্যতম ১২০০ ট্যাকা বরাদ্দ রাইখেন! না হইলে ফেসবুক পেজ “আমরা বড়লোক বাপের গরীব সন্তান’ চালানো কষ্টকর হইয়া পড়বো। এ ছাড়া ডেক্সটপ কম্পিউটারের কারনে ঘরের বাইরে গেলে আমি বহিঃবিশ্বের সাথে একপ্রকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ি। এর ফলে আমার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক আজ হুমকির মুখে। একখান ল্যাপটপ থাকলে আইজ আমার এই দশা হইতো না। বিষয়টা ভাইবা দেখার অনুরোধ রইলো।
পরিশেষে , বিগত দিনগুলাতে আমি যে দুর্ভোগ , দুর্দশায় ছিলাম আশা করছি আসছে বছরে এই বাজেট অনুমোদনের মাধ্যমে আমার সেই দুঃখের দিন গুলার অবসান ঘটবে ।
আপনারে ধইন্যবাদ।





8:20 PM
Admin
Posted in:
0 comments:
Post a Comment
এই লেখাটি ফেইসবুকে শেয়ার করতে ফেইসবুক আইকনে/বাটনে ক্লিক করুন।
মন্তব্য করার ক্ষেত্রে বন্ধুসুলভ আচরণের অনুরোধ রইলো।